ড. ইউনূসকে শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারি দাবিতে ভিডিও প্রচার, যা জানা গেল
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘অসাংবিধানিক অবৈধ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে, কড়া হুঁশিয়ারি দিলো শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ওই ভিডিওটি ইতোমধ্যে ১ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট থেকে এতে প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি হাজারেরও বেশিবার ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, টিকটকে প্রচারিত ওই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার কোনো গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারের নয়, বরং ২০০৭ সালে লন্ডনে দেয়া পৃথক একটি সাক্ষাৎকারের। এমনকি ভিডিওটির সঙ্গে শেখ হাসিনার ড. ইউনূসকে হুমকি দেয়ার কোনো সম্পর্কও নেই।
আরও পড়ুনঃ তিন কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে ডিসির পদায়ন!
টিকটকে প্রচারিত ওই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওতে শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘দেশে ফেরার পূর্বে তার নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসেব চাওয়া নিয়ে তিনি ভীত কি-না?’ পরে জবাবে শেখ হাসিনা সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি কোনো পাপ করিনি যে ভয়ে ভীত হবো। আর অ্যাকাউন্টের যে কথা বলছে, আমি দাবি করবো যে আমার অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে সব দেয়াই আছে। ইনকাম ট্যাক্স ফাইল আছে এবং আমি যখন ইলেকশন পেপার সাবমিট করেছি তখন আমি ইলেকশন কমিশনে যে সম্পদের হিসেব জমা দিতে হয়, তা আমি জমা দিয়েছিএদিকে প্রচারিত ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘তানভির আহমেদ’ (Tanvir Ahmed) নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ‘একজন কাউন্সিলরও যদি না যায়, পদত্যাগ করব- শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই প্রকাশিত ওই ভিডিওটি শেখ হাসিনার সেদিনের একটি সাক্ষাৎকারের। ওই ভিডিওর ২ মিনিট ২৮ সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড অংশের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা শেখ হাসিনার পোশাক ও অডিও অংশের হুবহু মিল রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ এ সরকার অসাংবিধানিক, দেশের মানুষের সমর্থন নেই: জয়
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানকালে ‘ইমিগ্রান্ট চ্যানেল’ (Immigrant Channel) নামের অপর একটি ইউটিউব চ্যানেলেও একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ২০০৭ সালের ১৬ মে ‘Sheikh Hasina made exclusive comments in London before her arrest’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ওই ভিডিওটির সঙ্গেও টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।
ইউটিউব চ্যানেলটিতে প্রকাশিত ওই ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১ মে লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনার বক্তব্যের ভিডিও সেটি। অর্থাৎ, টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সঙ্গে শেখ হাসিনার ড. ইউনূসকে হুমকি দেয়ারও কোনো সম্পর্ক নেই।
আরও পড়ুনঃ সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ নিয়ে যে তথ্য দিলেন আবহাওয়াবিদ পলাশ
এছাড়া গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো দেশি বা বিদেশি গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দেয়ার কোনো ভিডিও বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। সুতরাং, ২০০৭ সালে লন্ডনে বসে গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার দেয়া ভিন্ন একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবি করে ড. ইউনূসকে শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারি বলে টিকটকে প্রচার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।।’
Post a Comment